খরিপ মৌসুমের ফসল (পাঠ ৩)

সপ্তম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - কৃষিশিক্ষা কৃষি ও জলবায়ু | - | NCTB BOOK
161
161

যেসব ফসলের শারীরিক বৃদ্ধি ও ফুল-ফল উৎপাদনের পুরো বা অধিক সময় খরিপ মৌসুমে হয় তাদেরকে খরিপ ফসল বলে। খরিপ ফসলের বৈশিষ্ট্য জানতে হলে আমাদের খরিপ মৌসুমের বৈশিষ্ট্য জানতে হবে। খরিপ মৌসুমের বৈশিষ্ট্যগুলো হলো-

১. এ মৌসুমে তাপমাত্রা বেশি থাকে।
২. বৃষ্টিপাত বেশি হয়।
৩. বায়ুর আর্দ্রতা বেশি থাকে।
৪. ঝড়ের আশঙ্কা বেশি থাকে।
৫. শিলাবৃষ্টির আশঙ্কা বেশি থাকে।
৬. বন্যার আশঙ্কা বেশি থাকে।
৭. রোগ ও পোকার আক্রমণ বেশি হয়।
৮. পানি সেচের তেমন প্রয়োজন হয় না।
৯. দিনের দৈর্ঘ্য রাতের দৈর্ঘ্যের সমান বা বেশি হয়।

যেসব ফসল চাষাবাদের জন্য বেশি তাপমাত্রার প্রয়োজন হয় সেসব ফসল খরিপ মৌসুমে চাষাবাদ করা হয়।
খরিপ মৌসুমকে আবার দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে; যথা-

খরিপ-১: এ মৌসুমে মাঝারি বৃষ্টিপাত হয় এবং মৌসুমের শেষের দিকে বেশি বৃষ্টিপাত শুরু হয়। কালবৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টির আশঙ্কা বেশি। এ মৌসুমে দেশের অনেক অঞ্চলে ঢল বন্যার আশঙ্কা দেখা দেয়। এ সময় তাপমাত্রা খুব বেশি এবং বাতাসে জলীয়বাষ্পের পরিমাণ মাঝারি থাকে। ফসলে রোগ ও পোকার আক্রমণ মাঝারি হয়। ফসল উৎপাদনে মাঝারি ধরনের সেচের প্রয়োজন হয়। এ মৌসুমের প্রধান ফসল হলো- পাট, তিল, ডাঁটা, মুখি কচু, ঢেঁড়স, চিচিঙ্গা, ঝিঙ্গা, করলা, পটোল, মিষ্টি কুমড়া ইত্যাদি। আম, জাম, কাঁঠাল, পেঁপে, তরমুজ, বাঙ্গী এ সময়ে পাকে।

খরিপ-২: এ মৌসুমে সাধারণত বৃষ্টিপাত খুব বেশি হয়। ঝড় ও শিলাবৃষ্টির আশঙ্কা কম থাকে তবে বন্যার আশঙ্কা বেশি থাকে। তাপমাত্রা ও বাতাসে জলীয়বাষ্পের পরিমাণ বেশি থাকে। ফসলে পোকার আক্রমণ ও রোগ বেশি হয়। ফসল উৎপাদনে কৃত্রিম পানি সেচের প্রয়োজন তেমন হয় না। এ মৌসুমের প্রধান ফসল হলো- আমন ধান, পানি কচু, চাল কুমড়া, ঢেঁড়স, চিচিঙ্গা, ঝিঙ্গা, ধুন্দল ইত্যাদি। এ সময়ে তাল, আমলকী, আনারস, আমড়া, পেয়ারা, নাবি জাতের আম ও কাঁঠাল এবং বাতাবি লেবু পাকে।

কাজ: ঋতু অনুযায়ী শস্যের/ফলের বিন্যাস কর।
ফসলের/ফলের নামরবিখরিপ-১খরিপ-২
পাট, আমন ধান, আলু, তিল, ঢেঁড়স, ফুলকপি, কাঁঠাল, আনারস, পেঁয়াজ, তরমুজ, চালকুমড়া, সরিষা, মুখিকচু, তাল, মসুর

নতুন শব্দ: খরিপ ফসল, খরিপ-১ এবং খরিপ-২ মৌসুমের বৈশিষ্ট্য

Content added By
Promotion